মিজানুর নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর মান্দায় প্রতিপক্ষ বিএনপি নেতা সাংবাদিক রায়হান আলীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও মারপিটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় রায়হান আলী সহ চারজন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভুক্তভোগী রায়হান আলী এশিয়ান টেলিভিশনের নওগাঁর পঞ্চিমাঞ্চল প্রতিনিধি এবং মান্দার পরানপুর ইউনিয়নের পরানপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের বাসিন্দার । শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাত ৯ টার দিকে উপজেলার পরানপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামে বিএনপি নেতা দেলোয়ার ও তার লোকজনের মারপিট ও হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সাংবাদিক সংগঠনগুলো।
আহতরা হলেন, পরানপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মৃত তৈয়ম সরদারের ছেলে সোলাইমান আলী সরদার (৬৫), তার ছেলে হুমায়ন আলী (৪০), সাংবাদিক রায়হান আলী (৩৮) ও মৃত কেরামত আলী মোল্লার ছেলে খোদাবক্স আলী (৭০)। অপরদিকে অভিযুক্তরা হলেন, একই এলাকার প্রতিবেশী বিএনপি নেতা এবং লালবর সরদারের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (৫২), আব্দুল মতিন (৪৫),আব্দুল হাকিম (৪২),আব্দুল্লাহ (৩৫), হোসাইন (২৮) ও আব্দুর রাকিব (৩০) সহ আরো ১০/১৫ জন।
জানাগেছে, সাংবাদিক রায়হান পেশাগত দায়িত্ব পালন করে বাড়ী ফিরছিলেন। শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে বাড়ীর সামনে রায়হান আলী পৌঁছলে দলবদ্ধভাবে লাটিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাকে হামলা করে বিএনপি নেতা দেলোয়ার ও তার লোকজন। এসময় তার ডাকচিৎকারে তার বাবা ও বড় ভাই এবং বড় আব্বা এগিয়ে আসলে তাদের উপর উপর্যপুরি লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন গুরুত্বর আহত হন।
সাংবাদিক রায়হান আলী দৌঁড়ে পালিয়ে গিয়ে তার জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করেন। এসময় তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও বাড়িঘরে ভাংচুর চালানো হয়। পরবর্তীতে পুলিশে সহযোগিতায় আহতদেরকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হামলায় রায়হান আলীর বাবার মাথায় চারটি সেলাই, বড় ভাইয়ের মাথায় ধারালো অস্ত্রের কুপে ৯টি সেলাই দেয়া হয়েছে। এছাড়া বড় আব্বার কোমরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও মেরুদন্ডের হাড় ফেটে গেছে ও দুই হাত ভেঙ্গে গেছে। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তার নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে।
এ ব্যাপারে বলেন মান্দা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা: ইকরামুল বারী টিপু বলেন, দেলোয়ার বিএনপি নেতা হিসেবে তো মারধর করেনি। তবে যতটুকু শুনেছি জায়গা জমি নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এছাড়া মামলাও আছে।
এ ঘটনায় মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনসুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নওগাঁ জেলার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রিফাত হোসাইন সবুজ বলেন, যখন সাংবাদিক রায়হান আলীর উপর হামলা হয় তখন তিনি ফেসবুক লাইভে যুক্ত হয়ে সহায়তা চেয়েছেন। তবু ও দেরিতে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রশাসনের আর ও দ্রুত প্রদক্ষেপ গ্রহণ কামনা করেছিলাম। শুধু তাকেই নয় তার পরিবারের সদস্যদের উপরও হামলা হয়েছে। সাংবাদিকদের ওপর হামলায় বোঝা যায় গণমাধ্যম বর্তমান সময়েও নিরাপদ নয়। এভাবে একের পর এক সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে গণমাধ্যমকে যারা থামিয়ে দিতে চায় তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের কঠিন শাস্তির দাবি করছি।